চরভদ্রাসন সদরে বি.এস ডাঙ্গী গ্রামের অনিল চন্দ্র শীলের ছেলে অপূর্ব শীল প্রতারনা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা

প্রকাশিত: ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি-
 
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে বি.এস ডাঙ্গী গ্রামের অনিল চন্দ্র শীলের ছেলে অপূর্ব শীল (৩২) প্রতারনা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে স্বপরিবারে লাপাত্তা হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলা বাসষ্ট্যান্ডে ‘বন্ধু টেলিকম’ নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজারের পাশে ছয় শতক জমির উপর অপূর্ব শীলের একটি বসতভিটে ছিল। সে উপজেলার একাধিক ধর্ণাঢ্যর কাছে নিজের বসতভিটে বিক্রির ওয়াদা করে এবং নিজ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের উপর বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলে মোট প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতের আঁধারে পার্শ্ববতী দেশ ভারতে পাড়ি জমিয়েছে বলে এলাকাবাসী ধারনা করছেন। প্রতারক অপূর্ব শীল বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে বসতভিটে বিক্রি বাবদ লাখ লাখ টাকা বায়না নিলেও প্রকৃত দলিল করে দখল দিয়ে গেছে শামিম মোল্যা (৪৫) নামক এক গন্যমান্যকে।
উক্ত প্রতারকের কাছে ক্ষতিগ্রস্থ কামাল মোল্যা (৫৫) চরভদ্রাসন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি জানান, “ প্রায় ১৫ বছর আগে অপূর্ব শীলের পরিবার উপজেলা সদরে এসে বাড়ী করে। তার বড় ভাই অনকুল শীলের চরভদ্রাসন বাজারে সেলুনের দোকান আর অপূর্ব শীল বাজারে নতুন মোবাইল ফোন, ফ্লেক্সি ও বিকাশ লেনদেনের ব্যাবসা করে ভালো অবস্থানে ছিল। কিছুদিন আগে তার পিতা ও বড় ভাই ভারতে চলে যায়। সম্প্রতি সে বাড়ী বিক্রি করার জন্য কামাল মোল্যার কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা নিয়ে বায়না পত্র দেন। আগামী বৃহস্পতিবার বাকী ১৩ লাখ টাকা নিয়ে বসত বাড়ী দলিল করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই মা আশালতা শীল ও বোন ঝর্ণা রানী শীলকে নিয়ে রাতের আঁধারে অপূর্ব শীল লাপাত্তা হয়ে গেছে”।
এ ঘটনার তদন্ত অফিসার চরভদ্রাসন থানার এস.আই প্রবীর জানান, “ক্ষতিগ্রস্থ কামাল মোল্যা একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। কিন্তু অপূর্ব শীলকে ১৩ লক্ষ টাকা কি বাবদ দিয়েছিল তার কোনো কাগজপত্র এখনো দেন নাই। কাজেই প্রয়োজনীয় ডুকুমেন্ট পেলে আমরা যাচাইয়ের পর প্রতারনার ঘটনা এজাহারভুক্ত করবো”। আরেক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার রতন কুমার টিকাদার বলেন,“ আমার মাতৃমঙ্গল এনজিও থেকে ঋণ বাবাদ এবং আমার ভাইয়ের কাছ বসতভিটে বিক্রির জন্য অপূর্বশীল প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়েছে। পুলিশ একটি অভিযোগের ভিক্তিতে কাজ করলেইতো আমরা সবাই উপকৃত হবো। তাই ক্ষতিগ্রস্থ অন্য কেউ আর থানায় অভিযোগ করি নাই”।
খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কামাল মোল্যার কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা, রাজিব টিকাদারের কাছ থেকে ১০ লাখ, টিটু শিকদারের কাছ থেকে ৪ লাখ, সোহেল বেপারীর কাছ থেকে ৪ লাখ, শফি খানের ৪ লাখ, মোশারফ মৃধার ৩ লাখ, পারভেজ মৃধার ৪ লাখ, আলামিন মোল্যার ১০ লাখ, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই গৃহিনীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, উপজেলা যুর উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋণ বাবদ দেড় লাখ ও মানব উন্নয়ন এনজিও থেকে ৭ লাখ টাকা সহ বিভিন্ন এনজিও এবং বসতভিটে বিক্রির অজুহাতে বায়না বাবদ প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অপূর্ব শীল রাতের আঁধারে স্বপরিবার নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে বলে জানা যায়।